Posts

অণু রম্য : ঢপের চপ

Image
উপকরণ : ১) ঢপ ১ কিলোগ্রাম ২)লজ্জা ১০ গ্রাম ৩)ঘৃণা ১০০ গ্রাম ৪) ভয় ১০০ গ্রাম ৫) উস্কানিচূর্ণ ৫ গ্রাম ৬) জমাট বাঁধা গ্যাস ২৫০ গ্রাম পদ্ধতি  :   ১) একটি  থালার উপর যে কোনও মনের ১ কিলোগ্রাম ঢপ রেখে মিছরির ছুরি দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে কিমা বানান। ২) ১০গ্রাম লজ্জা,১০০ গ্রাম ঘৃণা ও ১০০ গ্রাম ভয়ের  মাথা থেঁতলে ঢপের কিমার সাথে মিশিয়ে ভালোভাবে মন কড়াইয়ের উত্তাপে কষতে থাকুন। ৩) প্রায় কষা হয়ে এলে আড্ডার মেজাজে অল্প অল্প  করে উস্কানিচূর্ণ  মেশাতে থাকুন।গন্ধ ছড়ালে আশেপাশে ন্যাকাচোখে বোকা বোকা চেয়ে নামিয়ে রাখুন। ৪) ঠান্ডা জলে ধান্দাবাজির ডিপফ্রিজে রাখা জমাটবাঁধা  গ্যাসের সাথে মিশিয়ে কালো হাতে আখের হাতুড়ি দিয়ে গুছিয়ে পিটিয়ে মন্ড তৈরি করুন। ৫)গ্ল্যামারাস আলুথালু বেশে দুই হাতের তালুর মাঝে  একটু মণ্ড রেখে আলতো চাপ দিয়ে বিলাস - ব্যসনে হাবুডুবু খাইয়ে টেনে  তুলে এনে দুরন্ত  আঁতলামির উষ্ণ তেলে  ছেড়ে দিন।দেখবেন কিছুক্ষণবাদে নাকানি চোবানি খেতে খেতে ফুলে ফেঁপে নেচে নেচে উঠে আসবে ঢপের চপ। ৬) সুযোগ  সন্ধানী  ছান্তায় ছেঁকে চাহিদামতো ছদ্ম...

রম্য রচনা : প্রশ্নোত্তরে অর্থ

Image
প্রশ্ন ১ :  অর্থ কি ? উত্তর : যাবতীয় অনর্থের মূল। প্রশ্ন  ২ : অর্থ  কি খায় ? উত্তর   :  মানুষের মাথা খায়। প্রশ্ন  ৩ : অর্থ  কোন ' বাদে' বিশ্বাসী ? উত্তর : ভোগবাদে। প্রশ্ন  ৪ : অর্থের  সাথে মনের সম্পর্ক কি ? উত্তর  :  ব্যাস্তানুপাতিক।              অর্থাৎ অর্থের পরিমাণ বাড়লে মনের                পরিমাণ কমে। প্রশ্ন  ৫ :  অর্থের  সাথে আভিজাত্যের সম্পর্ক  কি ?                       উত্তর    :  অর্থ ও মেকি আভিজাত্য সমানুপাতিক।                অর্থাৎ অর্থের  পরিমাণ বাড়লে মেকি                 আভিজাত্যও  বাড়ে।তবে প্রকৃত                  আভিজাত্যের সাথে এরূপ কোন সম্পর্ক               ...

অণু রম্য : সন্ধান চাই

Image
অতি সম্প্রতি মুখমন্ডল ফাঁড়ি এলাকার ঠোঁটপল্লীর মাঝের ফাঁক পাড়ার ৩২/২ পাটি লেনের নিজস্ব বাড়ি থেকে হাঁড়িমুখে নিখোঁজ হয়েছেন হাসি।পিতার নাম সুখ আনন্দ ও মাতা শান্তিময়ী দেবী। বিবরণ : নিখোঁজ হওয়ায় সময় পরনে ছিল ' মলিন বসন ' কোম্পানির ফ্যাকাশে রঙের পোশাক। বয়স : সঠিক জানা নেই।এ সম্পর্কে নানা মুনি নানা মত পোষণ করেন। গায়ের রঙ : ঝলমলে। প্রিয় খাদ্য : আবেগ। বিশেষ চিহ্ন : আড়চোখে তাকালে বাঁ চোখের তারায় আলতো পটলচেরা দাগ। মাতৃভাষা : প্রাণখোলা। তাছাড়াও হি-হি, হো - হো,মুচকি, অট্ট,মাপা,আঁতেল, গোঁফেল, ও টোল ভাষাতেও চোস্ত। পছন্দের স্থান :  গালের টোল,ঠোঁটের কোণ, মুগ্ধচোখ,রসিকমন,কাতুকুতু,লাজুক ঠোঁট। নিখোঁজ হওয়ার আগে বেশ কিছুদিন যাবৎ মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।চিকিৎসকেরা বলেছেন মানসিক অবসাদের কারণ পাগলামি নয়।কারা যেন তার মনের দুয়ারে তালা দিয়ে চাবিকাঠি নিয়ে চলে যাওয়ার তিনি বেশ কিছুকাল প্রিয় খাদ্য আবেগ না পাওয়ার হতাশায় দুর্দশাগ্রস্থ মাত্ৰ।কেউ সন্ধান দিতে পারলে একমুখ মুক্তোঝরা হাসি পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে। সন্ধান জানাবার ঠিকানা : স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট অফ মাইন্ড, এম আই ডি ( মাইন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিপ...

রম্য রচনা : দাঁতালের প্রেম

Image
 আড়াবাড়ির গভীর জঙ্গলের দিকে এগিয়ে চললো কুনকি। কুনকির চালচলনে যে একটা হম কিসিসে কম নহী ভাব  আছে তা তার চলার ছন্দ দেখেই বুঝা যায়।কুনকির ফেটে পড়া যৌবনে যে জাদু আছে তা কুনকির ট্রেনার জানে।আজ পর্যন্ত সে কম দাঁতালকে কাবু করে নি।কুনকির উপর ভরসা করা যায়।সেই আশাতেই বিট অফিসার ও রেঞ্জার সাহেবের রক্ত উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে লাগলো।দলছুট দাঁতালকে ও মাতাল করে ছাড়বে সেই আশাতেই ভরসা করে বসে আছেন রেঙ্গার সাহেব। কুনকি কাছাকাছি  যেতেই দাঁতাল কুনকির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।চোখের পলক আর পড়ে না।মনে মনে ভাবে আবার নতুন করে ঘর বাঁধলে  কেমন হয় ! কুনকি ও যেন কেমন হয়ে গেল।মনে মনে ভাবলো দাঁতালকে কাৎ করতে এসে নিজেই চিৎপাত হয়ে যাচ্ছে না তো। কিন্তু সে তো প্রফেশনাল ।তার তো আবেগ থাকলে চলবে না।তার মধুর মধুর কথায় দাঁতাল তো আইসক্রিমের  মত গলে জল।কুনকির সাথে গল্প করতে করতে দাঁতাল  এগিয়ে চললো  অফিসারদের পাতা ফাঁদের দিকে।হঠাৎ - ই কুনকি  আবিষ্কার করলো এতক্ষণ যে সব কথা বলে দাঁতালকে ফাঁদের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল  তা শুধু তার মুখের কথা নয়, মনেরও। কুনকি দাঁতালের শু...

রম্য রচনা : সাংসারিক ক্রিকেট

Image
ক্রিকেট কি শুধু শচীন - সৌরভ খেলে ? আমরা খেলি না! তাহলে ক্রিকেট নিয়ে এত মাতামাতি কেন ? অফিসে হাজিরা কম।কাজে মন কম।স্কুল এ ছাত্র কম। বাজারে সব্জি কম।বাসে ভিড় কম।রাস্তার লোক কম।প্ল্যাটফর্মে চেকার কম।ট্রেনে হকার কম।রকে রকে আড্ডা কম। মা -  বাবার বকুনি কম। সেলুনে লাইন কম।চোখে ঘুম কম।নিঃশ্বাসে বিশ্বাস কম।টিমের ওপর আস্থা কম।বেশি শুধু টিভির সামনে ভিড়।এ নিয়ে কাউকে কিছু বলি না,কেন না বললেই সম্পর্কে ধরবে চিড়। আরে না না ,আপনার সাথে আমার সম্পর্কটা তো একটু ইয়ের মতো মানে একটু বেশ মাখো মাখো তাই বলছিলাম আর কি ? আচ্ছা আপনিই বলুন আমরা কি ক্রিকেট খেলি না ? শচীন - সৌরভ - রাহুল - কুম্বলের ক্রিকেটের চেয়ে আমাদের ' সাংসারিক ক্রিকেট ' কম কিসে? ফারাক শুধু ওরা ' ব্যাট'নিয়ে লড়ে আর আমরা ',ব্যাগ' নিয়ে লড়ি।ওদের ক্রিকেটের থেকে আমাদের ক্রিকেটের হয়তো কিছু কিছু ফারাক আছে।তাই বলে নামের ফারাক এত হবে কেন ?ওরা হলেন ' ক্রিকেটার'আর আমরা হলাম ' ছাপোষা '। আর 'ছা' পোষে না কে শুনি। আর ' ছা' পুষি বলেই তো আজ তেত্রিশ কোটি কে একশো পার করে দিলাম।ওরা একশো পার করলে তো হৈ ...

রম্য রচনা : দূর্গা যাবেন বাপের বাড়ি

Image
মর্ত্যের বাতাসে এখন আনন্দফোয়ারা।নীল আকাশে হাসিমুখে ঘোরাফেরা করছে পেঁজাতুলা মেঘ।রোজ ভোরে সূর্যদেবের লাজুক উঁকিমারা দেখে ভরে যাচ্ছে মানুষের মন।আনন্দে গদগদ  হয়ে সূর্যদেব সোনাগলা রোদ্দুর ছড়িয়ে দিচ্ছে সবুজ গাছের প্রতিটি পাতায়।মাঠে মাঠে কাশফুলের হাসি ও শিউলি ফুলের গন্ধ মনে করিয়ে দেয় মা দূর্গার আগমন বার্তা।ঘাসের আগার মুক্তো শিশির মনে করিয়ে দেয় গ্রামে ফেরার কথা।আর তাই পথে পথে মানুষের ঘরে ফেরার ঢল।বাড়ীঘর সব সেজেগুজে ঝকঝকে তকতকে।দোকানে দোকানে রং বেরং এর পোশাকের মেলা।আনন্দে মাতোয়ারা মর্ত্য। অন্যদিকে কৈলাসে বিষাদের সুর। মা দূর্গা বাপের বাড়ি গেলে শ্মশানে মশানে থাকা ভোলেভালা ভোলা মহেশ্বরের কি হাল হকিকত হবে সে কথা ভেবে ভেবেই সকলের গালে হাত।এদিকে দেবীদুর্গার মর্ত্যে যাবার দিন যত এগিয়ে আসছে মহাদেবও তত মনমরা হয়ে যাচ্ছেন।হাসির মোড়কে যতই ঢাকার চেষ্টা করুন না কেন  বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কিন্তু অন্যকথা বলছে।কিন্তু কি আর করা যাবে।বাপের বাড়ী বলে কথা ।তাও আবার মাত্র তিনদিনের জন্য।সে তো ছাড়তেই হবে ।তবে দূর্গাকে নিয়ে মহাদেবের গর্বও কম নয়। কেননা মহাদেব ভাল করেই জানেন আজকের দিনের মর্ত্যের আল্ট্রামডার...

রম্যরচনা : রাহুনাশজী আসছেন

Image
( রাহুনাশজী একটি কল্পিত চরিত্র) আনন্দ সংবাদ !                      আনন্দ সংবাদ! আপনাদের শহরে আপনাদের সুবিধার্থে আপনাদের হাতের কাছের 'ওমুক' লজে মাত্র তিনদিনের জন্য আসছেন জ্যোতিষশাস্ত্রে আলোড়ন সৃষ্টিকারী জ্যোতিষ সম্রাট, জ্যোতিষ গুরু,জ্যোতিষ প্রভাকর, জ্যোতিষ বাচস্পতি, তন্ত্রসিদ্ধ মহাসাধক, তন্ত্রভৈরব, বাস্তুবিদ এবং জ্যোতিষ এর বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন ধরণের ধাতুর অসংখ্য পদক প্রাপ্ত এবং আরো আরো আরো অনেককিছু  বাবা রাহুনাশজী।সঠিক গণনা ও নির্ভুল প্রতিকারের জন্য মানুষের মুখে মুখে একটি কথা- ই ঘোরে :-------- ' সব জ্যোতিষী বার বার , রাহুনাশজী একবার '' প্রচারবিমুখ রাহুনাশজী বলেন ' আমি জ্যোতিষ গবেষক মাত্র '।আর তাই তিনি সহজেই বলতে পারেন ' ভাগ্য লেখেন বিধাতা পুরুষ, জ্যোতিষী দেখান পথ আস্থা  রেখে সস্থাদরে পূর্ণ করো মনোরথ।' রাহুনাশজী বিনারত্নে অসম্ভবকে সম্ভব করেন।দৈবকার্য্য দ্বারা শ্লেষ্মা থেকে কেচ্ছা, আমাশয় থেকে গর্ভাশয়, পাগলামি থেকে  ছ্যাবলামী, তোতলামি থেকে মাতলামি যে কোন রোগ হইতে সুস্থ করেন।তবে  তিনি মনে করেন মানুষের জীব...