রম্য রচনা : দাঁতালের প্রেম




 আড়াবাড়ির গভীর জঙ্গলের দিকে এগিয়ে চললো কুনকি। কুনকির চালচলনে যে একটা হম কিসিসে কম নহী ভাব  আছে তা তার চলার ছন্দ দেখেই বুঝা যায়।কুনকির ফেটে পড়া যৌবনে যে জাদু আছে তা কুনকির ট্রেনার জানে।আজ পর্যন্ত সে কম দাঁতালকে কাবু করে নি।কুনকির উপর ভরসা করা যায়।সেই আশাতেই বিট অফিসার ও রেঞ্জার সাহেবের রক্ত উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে লাগলো।দলছুট দাঁতালকে ও মাতাল করে ছাড়বে সেই আশাতেই ভরসা করে বসে আছেন রেঙ্গার সাহেব।














কুনকি কাছাকাছি  যেতেই দাঁতাল কুনকির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।চোখের পলক আর পড়ে না।মনে মনে ভাবে আবার নতুন করে ঘর বাঁধলে  কেমন হয় ! কুনকি ও যেন কেমন হয়ে গেল।মনে মনে ভাবলো দাঁতালকে কাৎ করতে এসে নিজেই চিৎপাত হয়ে যাচ্ছে না তো। কিন্তু সে তো প্রফেশনাল ।তার তো আবেগ থাকলে চলবে না।তার মধুর মধুর কথায় দাঁতাল তো আইসক্রিমের  মত গলে জল।কুনকির সাথে গল্প করতে করতে দাঁতাল  এগিয়ে চললো  অফিসারদের পাতা ফাঁদের দিকে।হঠাৎ - ই কুনকি 
আবিষ্কার করলো এতক্ষণ যে সব কথা বলে দাঁতালকে ফাঁদের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল  তা শুধু তার মুখের কথা নয়, মনেরও।
কুনকি দাঁতালের শুঁড়ে শুঁড় রেখে বললো " প্রিয়তম তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবো না।আমায় তোমার দলমায় নিয়ে চল ? কুনকির কথা শুনে অশ্রুভেজা চোখে দাঁতাল ধরলো গান -----

দলমার দাঁতাল আমি
কুনকিরে তুই শোন
তোর জন্য পাগলপারা
হল আমার মন
ওরে কুনকিরে ওরে কুনকিরে----

মানুষের সাথে মিশে
করিস কেন ছল
ভুলে গেলি কি তুই ওরে
দলমার জঙ্গল
ওরে কুনকিরে ওরে কুনকিরে-------

পাতবো ঘর দুজনে মিলে
দলমার জঙ্গলে
মাঝে মাঝে মেদিনীপুর
আসবো দলে দলে
ওরে কুনকিরে ওরে কুনকিরে --------

মানুষের পাতা ফাঁদে
দিস না রে তুই পা
দলমাতে চল তুই
হবি আমার ছেলের মা
ওরে কুনকিরে ওরে কুনকিরে -------



অশ্রুসিক্ত চারচোখ তখন ঘর বাঁধার স্বপ্নে বিভোর।
দাঁতাল বললো " , কিন্তু আমার বয়স অনেক বেশী।"
কুনকি মুচকি হেসে বললো 'প্রেমে বয়স নেই।'

দুজনেই এগিয়ে চললো দলমার দিকে।








----------------------
লেখক : ডঃ গৌতম কুমার মল্লিক










Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

রম্য রচনা :এক ব্যস্ত মানুষের সাক্ষাৎকার

রম্য রচনা : এক আস্ত ভূতের সাক্ষাৎকার

রম্য রচনা : বিজ্ঞাপনের পাতা